হালচর্চা ডেস্ক ♦
রোখসানা আলী হীরা ডাকনাম হীরা। জন্ম ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। লাক্স চ্যানেল আই ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় ২০০৮ সালে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন মডেল তারকা রোখসানা আলী হীরা।
৫ ফুট ৬ ইঞ্চির এই মডেল লাক্স তারকা হিসেবে মিডিয়াতে প্রবেশ করলেও র্যাম্প মডেলিংকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন।
‘ঢাকা ফ্যাশন উইক’ ২০১২ সালে তাকে বেস্ট র্যাম্প মডেল হিসেবে পুরস্কৃত করে। বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার অভিষেক হয় বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে। এরপর প্রায় ২০টি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেন তিনি। করেছেন অভিনয়ও।
হীরার চলার পথটা আসলে কেমন, তাই নিয়েই তার সাথে কথা বলেন প্রতিবেদক দুর্বার।
দুর্বার: কেমন আছেন?
রুখসানা আলী হীরা: সব মিলিয়ে ভালো। ব্যস্ততার মধ্যেই সময় কেটে যাচ্ছে।
দুর্বার: মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয়ও করেছেন। অভিনয়ের ইচ্ছাটা কি সবসময়ই ছিলো?
রুখসানা আলী হীরা: ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল মডেল হবো। অভিনয়ে আসবো এটা কখনও ভাবিনি। শুধু ভাবতাম, যদি মডেল হতে পারতাম বড় হয়ে।
দুর্বার: লাক্স চ্যানেল আই ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার পথচলাটা কেমন ছিল?
রুখসানা আলী হীরা: সেখান থেকেই আমার অনেক কিছু শেখা। তিন মাসের গ্রুমিং ছিল, যেখানে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। মিডিয়াতে আসতে পারার পেছনে আমার পরিশ্রম, কষ্ট তো ছিলই। তবে শুরুতেই ‘হীরা’ টাইটেলটা ধরে রাখতে প্রতিযোগিতাটি আমাকে অনেক সাহায্য করেছিল।
দুর্বার: পরিবার থেকে সাপোর্ট কেমন পেয়েছিলেন সেই সময়টায়?
রুখসানা আলী হীরা: আমার আব্বু অনেকটাই কনফিউজড ছিলেন—আমি কি করছি, কি করবো, পড়াশোনা, বাহিরের জগৎ সব কিছু একা কিভাবে সামলাবো এসব নিয়ে। বলতে গেলে আমার উপর একটু রাগই ছিল। বেশ কয়েকদিন আমার সাথে কথাও বলেননি।
দুর্বার: তখন কে আপনাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন?
রুখসানা আলী হীরা: আমার আম্মু। আমি যা করতাম উনি তাতেই সাপোর্ট করতেন। বলতেন, “যাই করো, ভালোভাবে করো, অবশ্যই ভালো কিছুই হবে।” আব্বুও এখন অনেক সাপোর্ট দেন, প্রাউড ফিল করেন। এখন পুরো পরিবারই আমাকে যথেষ্ট সাপোর্ট করে।
দুর্বার: র্যাম্প মডেলিং নিয়ে সামনে কী চিন্তাভাবনা? কী করবেন?
রুখসানা আলী হীরা: র্যাম্প মডেলিং আমার প্যাশন। আমি এটা কখনোই ছাড়বো না। তবে আগের থেকে র্যাম্পে হাঁটা কমিয়ে দিয়েছি। কোয়ালিটি দেখে কাজ করছি, বছরে দুই-তিনটার বেশি র্যাম্প শো করি না। বাহির থেকে ডিজাইনার আনা হলে বা ভালো মানের শো হলেই আমি থাকি, নয়তো না।
দুর্বার: প্রথম ক্যামেরার সামনের অভিজ্ঞতাটা যদি একটু বলতেন।
রুখসানা আলী হীরা: নার্ভাস ছিলাম খুব। লাক্সের কথাই বলি। প্রথম যখন টিভিসি শ্যুট হলো, তখন একটু কনফিউশন ছিল, ভয়ও ছিল আবার উত্তেজনাও ছিল। ডিরেক্টরের কাছ থেকে বুঝে নিলাম সব, এরপর আর তেমন ভয় লাগেনি।
দুর্বার: নতুন যারা মডেলিংয়ে আসতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান?
রুখসানা আলী হীরা: নতুন অনেকেই আসছে, আবার ঝরেও যাচ্ছে। তারা অনেক কিছুতেই কনফিউজড থাকে। এটা হয়েই থাকে। আমাদের লাক্স প্রতিযোগিতার ২০০৮ ব্যাচের কেউই কিন্তু এখন নেই। যে নিজের অবস্থানটা নিজে তৈরি করতে পারে, তার জন্যই টিকে থাকা সম্ভব। প্যাশন থাকতে হবে, হার্ডওয়ার্ক করতে হবে, এবং সব থেকে জরুরি নিজের মধ্যে ইচ্ছাটা থাকতে হবে। তাহলেই সব সম্ভব।
এখনকার মডেলরা খুবই দ্রুত উঠতে চায়। এতে কিছুদিন খুব কাজ করে, এরপর আর নেই। একটি নির্দিষ্ট ছন্দে এগিয়ে যেতে হবে। মনীষীরা বলে গেছেন—সফলতার কোনো শর্টকাট নেই। আমি বুঝি আসলেই কোনো শর্টকাট নেই।
সব মিলিয়ে আমি নতুনদের উদ্দেশ্যে বলবো, এই লাইনে আসার আগে প্রোপার গ্রুমিং নিয়ে আসা উচিত, কোনো প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আসা উচিত। সেখানে অনেক কিছু শেখানো হয়। অনেক কিছু জানা যায়। এতে তাদের অনেক কনফিউশনই কেটে যাবে, তারা অনেক কিছু জানতে পারবে, সহজে কাজ করতে পারবে। বাকিটা নির্ভর করে নিজের ইচ্ছাশক্তির উপর।
[মিছিল পত্রিকায় পূর্বে প্রকাশিত]