অফিস থেকে বাসার ফিরতি বাসে উঠে সিটে বসে কানে ইয়ারফোন গুঁজে দিলো তমা। প্রিয় গান বাজছে কানে। অভ্যাসবসত ফেসবুকে ঢুকলো সে। তার স্বামীর একাউন্টে গিয়ে চেক করলো তার ছবিতে পড়া লাভ রিক্টগুলো। এটা সে নিয়মিতই করে। কোনো মেয়ে যদি লাভ রিএক্ট দেয়, সে যেই হোক না কেন, তার স্বামীর অফিস কলিগ বা আত্মীয় বা নিছক কোনো বন্ধু- তমা সেটা নিয়ে তুমুল কাণ্ড ঘটায়। তার স্বামীকে কেউ লাভ রিএক্ট দিতে পারবে না, দিলেই তমার মাথা খারাপ হয়ে যায়!
যদিও তমা তার স্বামীকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু সে প্রচণ্ড ঈর্ষাকাতরও তার ব্যাপারে। সাধারণত সম্পর্কের নানা পর্যায়ে হালকা ইর্ষা কাজ করতে পারে, তবে সব সময়ই যদি ইর্ষাকাতরতা মানসিকভাবে অশান্তি তৈরি করে বা একটা সম্পর্ককে বিষিয়ে তোলে তাহলে এটা একটু ভাবনার ব্যাপার।
ঈর্ষাকাতরতার লক্ষণ
সঙ্গী দূরে থাকলে তাকে অবিশ্বাস করা
সঙ্গীর সফলতায় ভালো বোধ না করা
সব সময় সোশাল মিডিয়ায় চেক করা সঙ্গী কী করছে
সঙ্গী প্রতারণা করছে এমন চিন্তা করা
সঙ্গীর আচরণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা
ঈর্ষার ফাঁদ থেকে মুক্তির উপায়
ঈর্ষাকাতরতার কারণ খুঁজে বের করুন। এটা কী আপনার নিরাপত্তাহীনতা, ভয় নাকি অতীতের খারাপ অভিজ্ঞতার ফলাফল? কারণটা খুঁজে বের করলে এটা মোকাবেলা করা সহজ হয়।
যে ঘটনাগুলো ঘটলে আপনার ইর্ষা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে সঙ্গীর সাথে কথা বলতে পারেন। সঙ্গীর কোনো ব্যাপারে সংশয় থাকলে তা নিয়ে কথা বলে নেয়াটা একটা সমাধান হতে পারে। কথা বলতে দ্বিধা কাজ করতে পারে তবে এটাও ঠিক যে ঈর্ষা অনেক ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক একটা মানবিক অনুভূতি, যা হয়তো কখনও কখনও আপনার সঙ্গীরও হতে পারে।
ঈর্ষা মাঝেমাঝে বাস্তব জ্ঞান লোপ করে দিতে পারে, তাই বিশ্বস্ত কোনো বন্ধুর সাথে কথা বলতে পারেন। এতে পুরো বিষয়টাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীর দিক থেকে যাচাই করে নিতে পারবেন।
ঈর্ষাকাতরতা যে সমস্ত আবেগ জাগিয়ে তোলে তার মুখোমুখি হওয়াটা বেশ কঠিন। খারাপ লাগা, এবং নিজেকে অভিযুক্ত করাও এর ফলে ঘটে হরহামেশাই। আপনার যা আছে এবং আপনি যা চান এ দুইয়ের পার্থক্য করতে পারবেন এই আবেগী প্রতিক্রিয়াগুলো বিশ্লেষণ করলে।
শুধুমাত্র সোশাল মিডিয়া দেখে কাউকে বিচার করা বা তার জীবনে কী চলছে তা জানা সম্ভব না। এর বাইরেও মানুষের জীবন আছে, সেগুলোকেও আমলে নিতে হবে। আংশিক কিছু ব্যাপার দিয়ে পুরো ব্যাপার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।
আপনার যা আছে সেগুলোর একটা লিস্ট করুন, যা নেই তা নিয়েই যদি ভাবেন সারাক্ষণ তাহলে যা আছে সেটার আনন্দও হারিয়ে যাবে। সঙ্গীর ভালো ব্যাপারগুলোকে এপ্রিশিয়েট করুন তাকে ধন্যবাদ জানাতেও ভুলবেন না।
নিজের মূল্য সম্পর্কে সচেতন হোন। আপনার ভালো লাগার কাজগুলোতে মনোযোগ দিন। নিজেকে ঈর্ষার ফাঁদে আটকে রাখবেন না।
সূত্র: হেলথ লাইন